সুন্দর একটি গুণ, যেকোনো ভালো মন্দের বিচারে ভালো বিষয় কে আমরা সুন্দর বলে থাকি। পরমেশ্বর যিঁনি অনন্ত গুণের সমষ্টি,এই সুন্দর বিশ্বখানি অতি যত্ন সহকারে রচনা করে প্রতি মূহুর্তে প্রতিপালন করছেন।আমরা যারা নিজেদের মানুষ বলে দাবি করি তাদের মধ্যেও সৃষ্টিকর্তার গুণ বর্তমান এবং সেই গুণগুলোর বিপরীত দোষও আমরা জন্মসূত্রে প্রাপ্ত হই।
আমাদের শরীরের সৌন্দর্য কেও আমরা কাম,ক্রোধ, লোভের দ্বারা নষ্ট করে ফেলি।যেমন লোভের বশে অপরিমান, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে পেটের রোগে আক্রান্ত হতে হয়।অধিক কামের চর্চায় বাত,চর্ম, মস্তিষ্কের বিকার,অবসন্নতা ইত্যাদি রোগ সৃষ্টি হয় যা কয়েক প্রজন্মকে নষ্ট করে দেয়।দোষকে বর্জন করে গুণের অভ্যাস দ্বারা গুণি হওয়াকেই সুন্দর হওয়া বোঝায় যে উদ্দেশ্যে আমরা পৃথিবীতে এসেছি।
আমি সুন্দর হতে চাই কি না তার পরীক্ষা আমাদের নানাভাবে দিতে হয় তাই চারপাশে কন্টকময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কেবল অজ্ঞানতা বশত আমরা কারন এবং কার্যের মর্মার্থ উপলব্ধি করতে ব্যার্থ হই।
দেহ,মন এবং আত্মা এক বিষয় না,এটি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রমানিত। আত্মাকে যদি চৈতন্য শক্তি দ্বারা পরিচালনা করা যায় তাহলে আমরা পশুত্ব থেকে পর্যায়ক্রমে মনুষ্যত্ব,দেবত্ব,ঈশ্বরত্ব লাভ করতে পারবো প্রকৃত সুন্দর হতে পারবো।
ঈশ্বর শব্দের অর্থ গুণ।বহু বহু গুণের অধিকারী মহান আত্মা ঈশ্বর শব্দে কথিত হন।। আমাদের মধ্যে যে অষ্টপাশ ষড়রিপু (কাম,ক্রোধ, লোভ, মদ,মাৎসর্য্য) আছে এগুলো আমাদের সুন্দর হতে বাঁধা দেয়, এদের পরাস্ত করে আত্মোন্নতির দিকে ধাবিত হওয়াই মানব জন্মের সার্থকতা।
এই বিশ্ব প্রকৃতি সৃষ্টিকর্তার নিয়ম অনুসারে প্রতি মূহুর্তে নিঃস্বার্থ ভাবে আমাদের উপকার করে চলেছে, আমদের অবশ্যই তাদের মধ্যে থাকা গুণ অর্থাৎ তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের গুণরাশী বলে শেষ করা যাবে না।তাই উপাসনা এবং সাধনার মাধ্যমে আমরা যদি আত্মায় গুণ প্রবেশ করাতে পারি বহু সৌন্দর্য আমাদের মানসপটে চিত্রিত হবে যার ফলস্বরূপ আমরা সুন্দর হতে পারবো,যে সৌন্দর্য সীমাহীন।
সংসার যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে গৃহত্যাগী হয়ে সন্যাসী হওয়া যায় না উপরন্তু তাতে দায়িত্ব কর্তব্যে অবহেলা করার পাপ হয়ে বসে।কোন জড় বস্তু আমাদের রাগাবে না, কামের উদ্বেগ ঘটাবে না।আমরা সাধনা দ্বারা যদি এই পরিবেশে নিজেকে সংযত রাখতে শিখে যাই তবে আমারা গুণের সৌন্দর্যে সুন্দর হতে পারবো পোশাক পরে লোক দেখানো সন্যাসী নয়,গুণকে আত্মার ভুষন করতে শিখতে হয়। একমাত্র সত্য ধর্ম্মে তার সুচারু ব্যাখ্য আছে ।
যিঁনি নিজে সুন্দর হয়েছেন তিঁনি তার কৌশল জানেন। সত্য ধর্ম্মে যে কোন ব্যক্তি গুরু হতে পারে না। ঈশ্বরত্ব অর্জনকারী আদীষ্ট সাধক গুরু হওয়ার উপযুক্ত।তাঁর গুণের পরশে জন্ম জন্মান্তরের দোষরাশি গুণসোনায় রূপান্তরিত হয়।তাঁর জীবনের মূল উদ্দেশ্য নিজে সুন্দর হয়ে সকলকে সুন্দর (গুণী) হতে শেখানো।
0 মন্তব্যসমূহ