সাধনা শব্দের অর্থ অভ্যাস করা,নিজের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত করা। জন্মসূত্রে আমরা কাম,ক্রোধ,লোভ, মদ, মাৎসর্য্য ইত্যাদি নিয়ে জন্মগ্রহণ করি, পৃথিবীতে যতপ্রকার অন্যায়কার্য ঘটে তা এই পাশের তাড়নায় হতে থাকে। আমাদের কর্তব্য এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এর বিপরীত গুণগুলোর অভ্যাস করা।
সম্পত্তি বিষয়ে আসক্তি লোভের কারণে হয়।এই স্পৃহা মনুষ্যত্বকে ভুলিয়ে দিয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ায় ইন্ধন যার ফলস্বরূপ অর্থের জন্য মিথ্যাচার করা,ঠকবাজি,চুরি,হত্যা,ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই,পিতামাতাকে হত্যা,স্বামী স্ত্রীতে বিবাদ, প্রতিবেশীর সঙ্গে বচসা ইত্যাদি হয়ে থাকে।
সম্পত্তি বিষয়ে যারা নিস্পৃহ হন,এই মহৎ গুণসম্পন্ন ব্যাক্তি যখন তখন তার সম্পত্তি দিয়ে দিতে পারেন।এই গুণটি একজন্মেই হয় না,কয়েক জন্মের অভ্যাসের ফল।লোভি ব্যাক্তির পক্ষে এটি ভীষণ ভাবে অসম্ভব।
সম্পত্তি বিষয়ে অনাসক্ত ব্যাক্তি প্রেমিক হন কারন প্রেমে লাভালাভের অপেক্ষা করে না,নিজ স্বার্থ শূন্য হয়।
প্রচুর টাকা উপার্জন করার মতো যোগ্যতা থাকতে হবে কারন সেটা গুণের বিষয়, কিন্তু সম্পত্তির প্রতি বিন্দুমাত্র আসক্তি থাকবে না।এটার বিপরীত হয় বলেই জেল খাটতে হয় সেইসব মূর্খের দল অষ্টপাশ ষড়রিপু কে দমন করে না,সত্যিই যদি সাধক কেমন হয় জানতে চান সত্য ধর্ম্মের নিয়মে পরীক্ষা করে দেখুন প্রকৃত সাধনা কি এবং তার ফল কি হতে পারে।বসন ধারন করলেই সন্ন্যাসী হয় না,পাশমুক্ত না হলে।
উপাসনা বিনা আত্মা সতেজ হয় না।অভেদজ্ঞান পূর্বক জন্মজন্মান্তরের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে দীক্ষা না পেলে পাপবোধ,আত্মগ্লানী,পাপ থেকে মুক্তির বাসনা তৈরী হয় না।তাই ধর্ম্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে তারা বঞ্চিত।এ বিষয়ে তারা পূণ্যকে পাপ এবং ঘোর পাপকে পূণ্য বলবে এটাই স্বাভাবিক।
সূর্য,বায়ু,অগ্নি,জল, মৃত্তিকা,উদ্ভিদ ইত্যাদি এই প্রকৃতি স্রষ্টার নিয়মে বাঁধা। স্বাধীনতার বশে কোন ভুল তাদের হয়না।আমারা গুণ অর্জনের স্বার্থ ভুলে উচিৎ অনুচিৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমাদের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা ব্যাক্তি স্বাধীনতা আরোপ করেছেন। সবক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছেশক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই পরিশেষে গুরুদেব লিখেছেন "অম্লান বদনে প্রফুল্ল মুখে করিবে"- সেই ব্যাক্তি স্বাধীনতায় পরমপিতা এবং গুরুদেব কেউই হস্তক্ষেপ করেননা যার প্রমাণ চারপাশে ঘটতে থাকা অন্যায়।।
সত্যধর্ম্মে আদীষ্ট হয়ে যিনি দীক্ষা দান করেন, দীক্ষা দানকালে শিষ্যের কাছ থেকে একটি টাকা নেন না। চারপাশে যে মিথ্যাচার হয় সত্যধর্ম্ম সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত সত্যতায় পরিপূর্ণ। দীক্ষা একটি পরম জন্ম,এই জন্মে পিতা গুরু,মাতা বাহ্য জগতের অভিজ্ঞতা।আমরা যখন ভূমিষ্ঠ হই আমাদের বাবা মা নিশ্চই বলে না যে জন্মগ্রহণ করলি আমায় টাকা দিতে হবে তাই দীক্ষার সময় গুরু কেবল শিষ্যের জন্ম জন্মান্তরের পাপ গ্রহণ করেন,গুরু হতে গেলে অভেদ জ্ঞানকারী ও অপরের আত্মায় সঞ্চিত পাপ গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকতে হয় । তার জীবদ্দশায় শৈশব থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সম্পত্তি বিষয়ে নিতি নিস্পৃহ কিনা আমাদের যাচাই করা উচিৎ।এটা কেবল সত্যধর্ম্মে সম্ভব। চারপাশে সাধারণ মানুষের ভক্তি বিশ্বাস নিয়ে লোভীদের দল স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্ম্মের নামে ব্যাবসা করছে ।তবে সাধক সাধিকা হতে গেলে, গুণের অভ্যাস করতে এই সম্পত্তির প্রতি আসক্তি কমাতে হয়।এই সত্য মানতে পারে কজন ? বেশিরভাগ ভোগ বিলাসিতায় সমস্ত জীবন কাটাতে চায়,তার জন্যই বেঁচে থাকা।ব্যাতিক্রম দৃষ্টান্ত অবশ্যই আছে। পরমেশ্বর এঁর কৃপায় তাদের সত্যধর্ম্মে প্রবেশ ঘটবে এভাবে সৎপথে আমরা এগিয়ে যেতে সমর্থ হব।
0 মন্তব্যসমূহ