গুণ যদি সবাই বুঝতো,আত্মার উন্নতি চাইত তাহলে সহজ জ্ঞান, নির্ভরতা এবং বিশ্বাস সহযোগে সত্য ধর্ম্মকে অন্তরস্ত করতে পারতো কিন্তু বর্তমানে তার সংখ্যা কম তাই গুণের প্রতি ওপরি ওপরি ভালোলাগা দেখালেও কায়ে, মনে,বাক্যে সত্যকে অবলম্বন করতে পারার যোগ্যতা তাদের নেই ।
সত্য ধর্ম্মের বার্তা যিঁনি জগৎবাসীর মঙ্গলের জন্য জানিয়ে দায়িত্ব সহকারে পরিচালনা করেন তার গুরুত্ব সবাই বুঝবে না তাই লোক চোখে ঘৃনিত তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে পরমেশ্বর এঁর কাছে তিঁনি সমাদৃত। পরমপিতার গুণের যে নিয়ম সেই সত্যের বাইরে তিঁনি কোন কাজ করেন না।
"সত্যের সাধক তুমি উৎকৃষ্ট সত্য প্রচারে তুমি আদীষ্ট,এ পূজাতে তুমি সহায় শ্রেষ্ঠ তোমা বিনা পূজা নাহি হয়"।সত্যের উৎকৃষ্ট সাধক একমাত্র তিঁনি হতে পারেন যিঁনি সত্য গুণে পরমেশ্বর এঁর অর্থাৎ ব্রহ্মদর্শন করেছেন। সত্য ধর্ম্মের নিয়মের বাইরে তা হয় না। এইজন্য কোটি কোটি বৎসরে দুই একজন গুরু হওয়ার উপযুক্ত গুনাবলী সম্পন্ন আদীষ্ট এমন উন্নত হন।
ভালো সন্তান মানুষ করতে পরিশ্রম কম হয়,আমরা আত্মোন্নতির জন্য কেউ আসিনি তাদের মধ্যে উন্নতির ক্ষুদা জাগিয়ে সাধনা করানোর যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তিকেই পরম কারুণিক পরমেশ্বর, গুরুদেব এবং পারলৌকিক মহাত্মাগণ আদীষ্ট মনোনীত করেন, সত্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে।তাই গুরুদেব বলেছেন যখন যিঁনি আদীষ্ট হবেন তাঁর বাক্য অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে।
সত্য ধর্ম্মে যখন যিঁনি আদীষ্ট হবেন তাঁকে লোকচোখে ঘৃণিত হতেই হবে কারন প্রথমত মিথ্যাচার এর বিরুদ্ধে,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন, সেখানেই তিঁনি থেমে থাকবেন না, সত্য ধর্ম্মের নিয়মে উপাসনা সাধনা করিয়ে আত্মোন্নতি করাতে প্রাণপন ভাবে সব চেষ্টা করবেন আর ভালো করতে গিয়ে তাঁকে তো খারাপ হতেই হবে যেহেতু আমাদের মধ্যে তো অষ্টপাশ ষড়রিপুর তাড়নায় আমারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি কিন্তু একজন আদীষ্ট হতে গেলে তাঁকে কাম,ক্রোধ, লোভ, মদ মাৎসর্য্য ইত্যাদিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তবেই পরমপিতার দর্শন হয় ।আর ব্রহ্মদর্শন না করলে সত্যধর্ম্মে আদীষ্ট হওয়ার আদেশ পাওয়া যায় না।
সত্য ধর্ম্মের আবিষ্কারক ঈশ্বর গুরুনাথ সেনগুপ্ত রচিত সত্য ধর্ম্মের শ্রেষ্ঠতা সূচক প্রথম গানটিতে গুরুদেব বলেছেন,
"সুদিন আগত হলো এখনো জাগনা কেন ?
পাইতে মুকুতি তরী কেন এত অযতন?"
পর্যায়ক্রমে সুদিনের স্তর আছে যা আত্মোন্নতির ভিত্তিতে বিচার করা হয়।১৮৮৫ সালে ২০ শে অক্টোবর সাধারণ এর জন্য এই সুমহান সত্যের পথ আবিষ্কৃত হয় তাই সেদিন সুদিন।যখন যে সত্য ধর্ম্ম জানতে পারবে সেদিন তার জন্য সুদিন। সত্যকে অন্তরস্থ করার পর যখন এই জ্ঞান হবে যে গুণী হওয়াই মানব জন্মের সার্থকতা সেদিন সুদিন। যেদিন একত্ব পাবে সেদিন সুদিন।
একটি সুদিন এর মহিমা উপলব্ধি করার জন্য বেশকিছু দিন গুরু বাক্য নিষ্ঠা সহকারে পালন করার মধ্য দিয়ে পরমেশ্বর এঁর প্রীতিকর রূপে অতিবাহিত করতে হয় সাধনা এবং উপাসনা দ্বারা। যেদিন সে জানবে গুরু ভিন্ন কারোর পূজা করার প্রয়োজন নেই,সকল দেবদেবী তাঁর গুণের কাছে নত,মুখ্য ঠিক রাখলে গৌণ সুচারু ভাবে চলে ,মুখ্য পরমপিতা, সৃষ্টিকর্তা যিঁনি অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণময় তাঁর গুণকীর্তন করে এই সৃষ্টির মধ্যে সীমার মধ্যে তাঁর যে অসীম ভাব ,গুণের অভ্যাস দ্বারা তা কিঞ্চিৎ উপলব্ধি করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।এই সত্য বুঝতে পারলে সেই দিনটি তার সুদিন।
কল্পনা মাত্রই মিথ্যা এবং মিথ্যা মাত্রই পাপস্পর্শ হয়, কল্পিত দেবদেবীর ছবি বা মূর্তি পূজা করলে নরকগামী হতে হয় কারন ওটা মিথ্যাচার, দেবদেবীর অস্তিত্ব আছে তবে বর্তমানে তাদের এই মূর্তি বা ছবি সঠিক না, সত্যকে অবলম্বন না করলে দেবত্ব অর্জন হয় না, দেবদেবীদের অষ্টপাশ ষড়রিপু বশিভূত হয় না কেবল পাশ থেকে মুক্তর বাসনা তৈরি হয়, ঈশ্বরত্ব অর্থাৎ ব্রহ্মদর্শন করলে জীতেন্দ্রিয়তা জন্মে। অন্য কোন ব্যাক্তির ছবি এনে যদি বলা হয় এটা তুমি,আমি মানতে পারবো না, দেবদেবীদের এই মূর্তি গুলো কাল্পনিক কারন ক্যামেরায় তোলা না,তখন এরকম পোশাক বা গয়না ব্যাবহার করা হতো না, এরকম নিখুঁত চেহারাও ছিলো না ইত্যাদি। মন্ত্র উচ্চারণ করে তাদের পূজা করা সম্ভব যে মন্ত্রের মধ্যে সেই দেব বা দেবীর গুণাবলী বিদ্যমান।সেই মন্ত্র জানতেও সত্য ধর্ম্মকে অবলম্বন করা আবশ্যক। এই সত্যকে অন্তরস্থ করতে পারলে তার সুদিন আসবে।
নিজেকে শ্রম দেওয়ার মাধ্যমে আত্মোন্নতিতে ব্রতি হওয়ার সঙ্কল্প গ্রহন করতে পারার দিনটিও সুদিন।
কুসংস্কার মুক্ত হয়ে বিজ্ঞান এবং উন্নত প্রযুক্তির দরুন সত্যতা যাচাই করতে পারছি আমরা এটিও আমাদের সুদিন।
পৃথিবীতে যতবার সত্য ধর্ম্মের আদীষ্টের আবির্ভাব হবে, জগতের মঙ্গলের জন্য অবশ্যই সুদিন কারন তাঁর জীবন সকলের উদ্ধার কার্যে নিয়োজিত,তবে অজ্ঞানতা বশত এই সত্য থেকে কোটি কোটি মানুষ বিরত তাই প্রকৃত সুদিন এর গুরুত্ব তারা বুঝতে পারছে না।
0 মন্তব্যসমূহ