আমরা যখন জন্মগ্রহণ করি তখন দ্বাদশ পুরুষের পাপ রক্তের মাধ্যমে শরীরে নিয়ে ভূমিষ্ঠ হই। যার কারনে কিছু রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে।আর জেনে, না জেনে প্রতিনিয়তই পাপ কার্য করে নিজেরা কলুষিত হই যার ফলস্বরূপ রোগাক্রান্ত হই। আমাদের শরীরের মধ্যেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা পরমেশ্বর দিয়ে দিয়েছেন ঔষধ সেবন করলে তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় মাএ। আমরা যদি উপাসনা করে গুণ অর্জন করি এবং সেই অর্জিত গুণের অভ্যাস এর মাধ্যমে আমাদের সাধন জীবনে আত্ম উন্নতির জন্য সচেষ্ট হই এবং আত্মার যে বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ সচেতনতা, সেটি মাথায় রেখে জীবন কে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করি আমারা গুণি হতে পারব যার দরুন কম রোগগ্রস্ত হব। "উপাসনা খন্ডে" আমাদের পরমারাধ্য গুরুদেব যে উপাসনা পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করেছেন, তা নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান সম্মত, সত্য ধর্ম্মে সকল বিষয়ই বিজ্ঞান সম্মত। এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে কারোর ক্ষমতা নেই যে এই বিষয়গুলিকে খন্ডন করতে পারবে বা ভূল প্রমান করতে পারবে। তাই কি আধ্যাত্মিক কি পার্থিব সকল রোগের ঔষধ হল উপাসনা যা জীবনের মূল এবং চালিকা শক্তি। উপাসনা মস্তিষ্কের বিষয় মস্তিষ্ককে উপাসনা দ্বারা সঠিক ভাবে পরিচালনা করা গেলে শরীর সুস্থ হতে বাধ্য। যোগ সাধনা করে বহু পরিশ্রম করেও যেসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না গুন সাধনা দ্বারা পরমেশ্বর এঁর গুনকীর্তন করে অনায়াসে তা থেকে মুক্তি সম্ভব কারন যোগ এর থেকে গুণ অতিউন্নত উপায়। ২+২+২+২+২=১০
২×৫=১০ যোগ আর গুণ এর প্রভেদ।শরীর সুস্থ হওয়ার পর অকৃতজ্ঞতা বশত যদি আরোগ্য প্রাপ্ত ব্যক্তি উপাসনা না করে তাহলে সে পুনরায় অন্য রোগের শিকার হতে পারে।তাই শরীর সুস্থ হওয়ার পর ইচ্ছা থাকলে উপাসনা পুনরায় হয় তার।সোনা যেমন একবার পোড়ালেই খাদ মুক্ত হয় না বহুবার পোড়াতে হয় তেমন আমরা যদি উপাসনার পবিত্র অনলে নিজেদের আত্মাকে দগ্ধিভূত করতে পারি তবে মলিনতা শূন্য হতে পারব যাতে মানব জন্মের সার্থকতা সাধিত হবে।
নরম আত্মায় গুণ সহজে প্রবেশ করে:
সৃষ্টের সর্ব্ব শ্রেষ্ট গুণ যাহা প্রেম জননী। ভালোবাসাই অঙ্কুর অপর ভালবাসার উন্নত পরিণতিকে প্রেম কহে অর্থাৎ অপরকে আত্মায় সংলগ্ন করাকে বা অপরের সুখ-দুঃখাদি অবস্থাতে আপনাকে উপনীত করাকে প্রেম কহে। যে গুণ থাকিলে মরিয়াও বাঁচে, আত্মাতে যাহার অভাব কখনও হয় নাও হইতেও পারে না, যাহা দুঃখকেও সুখে পরিণত করে, সুতরাং যাহা সুখদুঃখ চায় না, লাভালাভের অপেক্ষা করে না, কেবল অভীষ্টকে পাইবার জন্য প্রবর্তিত করে, তাহাকে প্রেম কহে। যে গুণ থাকিলে ঐ গুণের অজনকে পাইলে প্রাণ শীতল হয়, আত্মা তৃপ্তিলাভ করে, মন অভিনব আনন্দরসময় ভাবের উদয় হয়, হৃদয় নবভাবে কার্য্যে প্রবৃত্ত হয়, ও পরমাত্মার প্রকৃত কার্য্য করা হয়; আর না পাইলে প্রাণ কিছুতেই শীতল হয় না হৃদয় নীরস হয়, মন ভাবশূন্য প্রায় হইয়া পড়ে, জীবাত্মার ক্লেশের ইয়ত্তা থাকে না, এবং পরমাত্মার উৎকর্ষ ও শান্তি হয় না। মূল কথা যে গুণে ঐ পরম গুণের ভাজনের দোষ গুণে আসিয়া পড়ে, দোষ দেখিতে বাসনা হয় না, কেবল গুণই লক্ষ্য হয়, কথা শুনিলে প্রাণ জুড়ায়, না শুনিলে জগৎ অন্ধকারময় ৰোধ হয়, অভাবে জীবস্মৃত থাকিতে হয়, ভাবে সকল অশান্তি দূরে যায়, ফলতঃ। ঐ গুণের প্রকৃত ভাজনের চিহ্নমাত্র না পাইলে কিছুতেই জীবিত থাকা যায় না, তাহাকে প্রেম কহে। প্রেমে সকল গুণের গুণত্ব (সংস্কার) হয়, এজন্য উহা গুণের গুরু বলিয়া কথিত হইতে পারে। যেমন কান্তিহীন দেহের কমনীয়তা কাঞ্চনযোগে বাড়ে না, সেইরূপ প্রেমসাধনাহীন আত্মার উন্নতি অন্য গুণে তত হয় না, ইহার সাধনা সর্ব্বপ্রথমে আরম্ভ হইলে ও সর্ব্বশেষেও শেষ হয় না, সুতরাং ইহা অসীম কাল সাধনের ধন। সর্ব্ব ভূমণ্ডলের সকল লোকের হৃদয়েই প্রেম আছে, (বা প্রেমাঙ্কুর আছে), সকলেই উহার জন্য পাগল, সকলেই ঐ ধনের ভিখারী। ঐ সুধাময় রসের স্বাদ পাইলে মোহিত না হয়, এমন কেহই নাই, তথাপি উহার স্বরূপ নির্দেশ করা বোধ করি কাহারও সাধ্য নহে, কেন না যাহার অন্ত পাওয়া যায় না, তাহার প্রকৃত স্বরূপ কিরূপে নিদ্দিষ্ট হইবে? দুঃখময় সংসারে সুখের চন্দ্র প্রেম, ভালবাসা জীবনের বন্ধন, জীবন উহাতেই উৎপন্ন, উহাতেই স্থিত এবং উহার ব্যতিক্রমেই ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। বিষময় বিষয়-ধনে প্রেমসুধা-ব্যতীত কিছুতেই শান্তি নাই। এ ধন আঁধারে আলোক, দুঃখে অশান্তিনাশক ও বর্দ্ধনশীল, সুখে সুখ-বর্দ্ধক, যৌবনে বৃদ্ধত্ব ও বার্দ্ধক্যে তারুণ্য সম্পাদক এবং জীবনের চিরসম্বল। এই অসীম গুণের বর্ণন, অসীম কালেও শেষ হইবার নহে। কোন মহাত্মা এ বিষয়ে যাহা বলিয়াছেন তাহা এই- ভালোবাসাকে প্রেম কহে।
0 মন্তব্যসমূহ