মূর্ত্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা কি সম্ভব?


 

ঈশ্বর শব্দের অর্থ গুণ, পরমেশ্বর অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণের সমষ্টি। কোন একজন মহান আত্মা যদি ব্রহ্মদর্শন অর্থাৎ কোন একটি বা একের অধিক গুণের অনন্ত ভাব প্রাপ্ত হন যাকে একত্ব পাওয়া বলা হয়, তেমন গুণসম্পন্ন মহাত্মা ঈশ্বর শব্দে কথিত হন(ঈশ্বরত্ব লাভ যিঁনি করেন সেই মহাত্মার অষ্টপাশ ষড়রিপু যথা কাম,ক্রোধ,লোভ,মদ,মাৎসর্য্য ইত্যাদি বশিভূত থাকে)।***ঈশ্বর কোন ইট,কাঠ,পাথর দিয়ে তৈরি করা যায় না । সত্য কে অবলম্বন পূর্বক গুণের অভ্যাস দ্বারা পশুত্ব, মনুষ্যত্ব, দেবত্ব, ঈশ্বরত্ব এই পর্যায়ক্রমে ঘটে,এটাই সত্য(মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হলে সমদর্শন সাধনায় সিদ্ধি লাভ করতে হয় যে সাধনার ফলস্বরূপ ক্ষুদাহীন, তৃষ্ণাহীন এবং নিদ্রারহিততা অবস্থায় থাকার ক্ষমতা তৈরি হয়)। কল্পনার ভিত্তিতে ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব না।যারা পেয়েছি বলে তারা মিথ্যাচার এ পরিপূর্ণ। দেবতাদের অষ্টপাশ ষড়রিপু বহাল তবিয়াতে থাকে কেবল পাশ হতে মুক্তির বাসনা জাগে।তাই ঈশ্বর গুরুনাথ যিঁনি সত্যধর্ম্মের আবিষ্কর্তা সকল দেবদেবী তাঁর গুণের কাছে নত । সত্য ধর্ম্মের আদীষ্ট হতে গেলে পরমপিতার দর্শন লাভ করতেই হয় তাই যেকোনো দেবদেবী তাঁর আজ্ঞাবাহী হন।গুরু ভিন্ন কারোর পূজা করা আমাদের প্রয়োজনই নেই।
জন্ম জন্ম ধরে গুণের অভাবে আত্মা অতৃপ্ত থাকে।আমরা কখন তৃপ্তি লাভ করি ? আগে যে কাজটি আমি পারতাম না,এখন যদি পারি,জ্ঞান ,প্রেম, ভক্তি, দয়া,কৃপা, সরলতা, পবিত্রতা, বিশ্বাস, কৃতজ্ঞতা, নিরাময়,ক্ষমা, একাগ্রতা,দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণের প্রভাবে আত্মা সুখী হয়।আত্মার চাহিদা গুণ।অজ্ঞানতা বশত আমরা এই সত্য বুঝতে সমর্থ হই না। উপরন্তু অষ্টপাশ ষড়রিপুর তাড়নায় পাপে লিপ্ত হই যার ফলস্বরূপ আত্মার চারপাশে একটি আবরণ সৃষ্টি হয়,আত্মা বহু ক্লেশ ভোগ করে কারন আমরা তাকে ভালো কিছুর জোগান দিতে ব্যার্থ হই।
সত্য ধর্ম্মের গুরু এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ দেখানোর যোগ্যতা রাখেন। গুরু পাপগ্রহণ এবং অভেদ জ্ঞান পূর্বক সেই মুক্তি বীজ প্রদান করেন। উপাসনা এবং সাধনার মাধ্যমে গুণের অভ্যাস করিয়ে নেন। পার্থিব ভাবে একটি বীজের পরিপূর্ণতা লাভের উপযুক্ত উপাদান যেমন জল,মাটি,কার্বন ডাই অক্সাইড, সূর্যালোক প্রয়োজন তবেই গাছে ফুল হবে,ফল ধারন করবে। প্রকৃত ব্রহ্মবীজ না পেলে এসব বিষয় নেই কিন্তু পাওয়ার পর গুণের অভ্যাস দ্বারা এবং উপাসনা দ্বারা গুণী হওয়ার ইচ্ছা অব্যাহত রাখতে হয়। সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে গুণ সাধ্যের মধ্যে আসে, সিদ্ধি লাভ হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ