গুরুদেবের প্রতি বিশ্বাস হয়েছে কয় জনের??? প্রশ্ন এখানেই, তাহলে কি ভক্তির নামে দ্বিচারিতা করে চলছে তারা? সকলকে ভাবতে বলছি এ বিষয়ে, সত্যের ছায়াতলে আছি বলে যারা নিজেদের মনে করে,তারা আর কতদিন মিথ্যাচার করে চলবে? সকলকে অনুরোধ করছি, গুরুদেবের লেখা সংস্কৃতে 'বিশ্বাস প্রবন্ধ' পড়তে। সেখানে কি লেখা আছে এবং আমাদের কি ভাবে সাবধানতা অবলম্বন করে চলা উচিৎ যাতে আমরা গুরুদেবকে ভক্তি ও বিশ্বাস করতে পারি,সেটা জানতে হবে সবাই কে। যারা মিথ্যাচারে থাকে তাদের কাছে সত্য উপস্থাপন করে দেখিয়ে দিলে তাদের কষ্ট হয়, এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কষ্ট হলেও সত্য তো সত্যই। যারা সত্যকে অন্তরস্থ করতে পেরেছে তাদের কাছে এই বিজ্ঞান ভিত্তিক সত্য আনন্দদায়ক হয়। "বিশ্বাসের" পূর্বে দুইটি ধাপ পার করতে হয় প্রথমটি "প্রত্যয়" ও দ্বিতীয়টি "নির্ভরতা" অর্থাৎ প্রতীতি। "সর্ব্বেষাং সৎগুণানাং হি কৃচ্ছ্রং সাধন মাদিমম্। তেন প্রত্যয়-লাভো হি দুষ্করঃ সাধকৈ রপি। পূর্ব্বজন্মার্জ্জিতৈঃ পুণ্যৈ র্মহতঃ কৃপায়াঽথবা। ভগবৎকরুণালেশা-ল্লভ্যতে প্রত্যয়ো নরৈঃ।।" অর্থাৎ জন্ম জন্ম ধরে কৃচ্ছ সাধনা দ্বারা সমস্ত রকম সৎগুণে বিভূষিত হলে পরমপিতার কৃপায় "প্রত্যয়" জন্মায় অতএব প্রত্যয় অর্থাৎ "কানে শোনা" যে ইনি "আদিষ্ট হয়েছেন এবং গুরু হওয়ার উপযুক্ত গুণাবলীতে বিভূষিত"। প্রত্যয় অর্থাৎ শোনার পরে তাঁকে নির্ভর করা শুরু করতে হয়। নির্ভরতার মাঝের অংশে ১)"স্বতোনির্ভরতা" তারপর শুরু হয় ২)"গরীয়সী" অতঃপর ৩)"জাত নির্ভরতা"। এই নির্ভরতার স্তর পার হলে এর পরে বিশ্বাস গুণ তৈরী হওয়া শুরু সুতরাং গুরুর প্রতি অর্থাৎ আদিষ্টের প্রতি বিশ্বাস তৈরী হয়। নির্ভরতা স্তরের তিনটি অংশের মধ্যেই সমস্ত সিদ্ধি এবং দেবত্ব প্রাপ্তি হয় অতঃপর অষ্টপাশ ষড়রিপু বশীভূত হলেই ব্রহ্ম জ্যোতি দর্শন লাভ হয়। এর পরের স্তর "বিশ্বাস" অর্থাৎ "ব্রহ্মদর্শন" মানে একত্ত্ব প্রাপ্তি। তখনই, গুরু যে একত্ত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন তা বোঝা যায় সুতরাং যারা বলে আমি গুরুকে ভক্তি করি,বিশ্বাস করি তারা মিথ্যা কথা বলছে। এই বিষয়ে "বিশ্বাস প্রবন্ধ" ভালোভাবে পড়ার কথা বলছি তাহলে পরিষ্কার হয়ে যাবে। গুরু যে একত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন তা বোঝার জন্য গুরুর প্রতি "নির্ভরতার পরাকাষ্ঠা" প্রাপ্ত হওয়া প্রয়োজন। পরিশেষে পরমপিতার দর্শন লাভ হয় তখন সাধক বুঝতে পারে গুরুদেব আদিষ্ট হয়েছেন, তার আগে "বিশ্বাস হয়" না। আর এর বাইরে যারা যা বলছে তারা মিথ্যা প্রবঞ্চনা করছে মাত্র।
গুরুদেবের সান্নিধ্যে থেকে চারজন সাধক একত্ত্ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন, সুতরাং তারাই একমাত্র বলতে পারেন আমরা গুরুর প্রতি বিশ্বাস রাখি।
মহাত্মা নিবারণ মাতাজীর কাছে কেউ একত্ত্ব লাভ করেনি সুতরাং কেউ তাঁকে ভক্তি ও বিশ্বাস করেনি এটাই প্রমাণ হলো।
ঐ চারজন বাদে পরবর্ত্তীতে গুরুদেবকে কয়জন বিশ্বাস করেছে? তারা যে গুরুবাক্য পালন করেনি এটাই স্বাভাবিক। গুরুদেব বলেছে "গুরু ভিন্ন কাহারো পূজা করিবে না" তা তো শোনা হয়নি। "কল্পনা অর্থাৎ মিথ্যা আর মিথ্যা মাত্রই পাপস্পর্শ হয় জানিবে" সেখানে সেই মিথ্যা ছবি মূর্ত্তি পবিত্র গুরুদেবের পাশে রেখে পূজা করছে তথা কথিত সত্যধর্ম্মাবলম্বী গন। মহাত্মা নিবারণের লেখা, "গুরুদেব মহাত্মা ভোলানাথের থেকে উন্নত হয়েছেন" এটা কজন বিশ্বাস করেছে? নিজে উন্নতি করে দেখতে হবে তো সত্যি কি উনি অত উন্নতি করেছিলেন? তা তো ওরা কেউ করতে পারেনি তাই ঐ মহাত্মার কল্পিত ছবি মূর্ত্তি কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। গুরুদেব বলেছেন,"গুরুকে সর্ব্বপরি রাখতে হয়" তা কি হয়েছে? নিশ্চয়ই নয়। "মা আদরমণি" দেবীকে সমস্ত দেবদেবী পূজা করে গুরুদেবের আশির্বাদ পাওয়ার জন্য,এটা কজন বিশ্বাস করে?
চারিদিকে ভক্তির নামে ছলনা চলছে। সত্যধর্ম্মের এই পথ একমাত্র আত্মোন্নতির জন্য এখানে মিথ্যাচারের কোনো জায়গা নেই। কেউ মিথ্যাচার করলে সে ধরা পড়বেই। এই ধর্ম্ম পরমপিতার সান্নিধ্য পাবার জন্যই সুতরাং সাধক সাধিকাদের অতি সাবধানতায় "গুরু ভক্তি" বিষয়ক তথ্য প্রদান করা উচিৎ অন্যথায় পাপ কার্য্য করা হয়।
মহাত্মা নিবারণ, মহাত্মা সীতানাথ, মহাত্মা বৈকুণ্ঠ ও মহাত্মা বলরাম এই চারজন গুরুদেবের সান্নিধ্যে একত্ব লাভ করেন যা কোটি কোটি বৎসরেও লাভ করতে পারতনা কেউ,তা মাত্র চার বছরের মধ্যেই সম্ভব হয়েছিল। এহেন গুরুকে বিশ্বাস ও ভক্তি করতে পারেনি কেন এতবছর ধরে ? কারণটা ত আগেই জানিয়েছি। গুরুদেব নিজের সিদ্ধি ও ব্রহ্মদর্শনের কথা যেগুলি উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন গ্রন্থে,তা তিনি আয়ত্ত করেছেন বলেই বলতে পেরেছেন এবং প্রমাণ সহ রেখে গেছেন নিজ হস্তে লিখে। গুরু হওয়ার গুণের কথা গুরুদেব যা লিখেছেন তা আধ্যাত্মিক জগতে আর কেউ লেখেনি। তিনি সেই গুণাবলী অর্জন করতে পেরেছেন বলেই লিখেছেন। কেউ যদি ঐরূপ ভাবে প্রমাণ রেখে কথা বলে, তাহলে "বিশ্বাস" প্রবন্ধ বিজ্ঞান সম্মত সুতরাং তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য বিশ্বাস প্রবন্ধের ধাপ/স্তর পার করেই বুঝতে হবে, তিনি আদিষ্ট কি না, এটাই নিয়ম।
- আদিষ্ট নিরুপম।
0 মন্তব্যসমূহ