দিবা যায় নিশা এল, এখনও জাগনা কেন?





 "দিবা যায় নিশা এল,এখনো বুঝনা কেন ?
কত কার্য্য রাজ্যময়,বারেক কর দর্শন।
লভ পাপ হতে মুক্তি,সকলে শুনাও সূক্তি,
যাতে পায় তারা মুক্তি,সে ভক্তি কর বর্ধন।"
--- ঈশ্বর গুরুনাথ সেনগুপ্ত(ঈশ্বর কারন তিঁনি বহু গুণে পরমেশ্বর এঁর দর্শন লাভ করেছেন) তিঁনি পৃথিবীতে ধর্ম্মকে ধারন করার যে নিয়মাবলী, উপদেশ সমস্তকে মন্থন করে এবং সত্যকে অবলম্বন পূর্বক উপাসনা সাধনা করে যে সত্য নিত্যকাল বিদ্যমান ছিল আছে এবং থাকবে সেই তত্ত্ব আবিষ্কার করে পৃথিবীবাসীকে উদ্ধারের পথ দেখিয়েছেন।মুক্তি বলতে প্রকৃত অর্থে যা বোঝায় কোটি কোটি মানুষের কাছে তা অজানা,অলীক কল্পনা।তাই কিছু ব্যক্তি যারা গুণকে সম্মান করেন তারা ধর্ম্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পরেছেন শেষমেশ আস্থা হারিয়ে নাস্তিকতার পথ বেছে নিয়েছেন।কেনই বা নেবেন না! মিথ্যা আস্তিকতার চেয়ে নাস্তিকতা অনেকাংশে শ্রেয়। চারিদিকের অন্ধকারে মধ্যে সত্য ধর্ম্ম মহাসূর্য উদিত হয়েছে।সত্যের আয়না চিরস্থায়ী।দিন চলে রাত্রি আসছে অর্থাৎ কালের নিয়মে আমাদের আয়ু শেষ হচ্ছে তবুও প্রকৃত গুরুর অভাবে মানব জন্মের সার্থকতা সম্পাদিত হয় না,অধর্ম্ম অর্থাৎ যা বিজ্ঞান সম্মত নয় তার পিছনে ছুটে নরকগামী হচ্ছে, অন্যায় কার্যে লিপ্ত হচ্ছে। আত্মোন্নতির জন্য আত্মায় যে চেতনাবোধ,গুণ অর্থাৎ (সত্য, জ্ঞান,প্রেম,ভক্তি,করুণা,দয়া,কৃপা,ক্ষমা,একাগ্রতা,সরলতা, শ্রদ্ধা,কৃতজ্ঞতা,চৈতন্য,পবিত্রতা,আনন্দ,আশির্বাদ ভিক্ষা,সুন্দর,নির্ম্মল,নন্দন,অমৃত,ধ্যান,গুণকীর্তন,মমতা, মঙ্গল,ক্রমোন্নতি,বিশ্বাস,সহনশীলতা,দৃঢ়তা,নির্ভরতা, শান্তি,নিরাময়) ইত্যাদির প্রতি যে আকর্ষণ,এই গুণগুলো আমাদের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আনার যে চেষ্টা তার জন্য সত্য কে অবলম্বন করা প্রয়োজন।কারন অনন্ত গুণময় সৃষ্টিকর্তা সত্যস্বরূপ,তাঁকে উপলব্ধি করার পথ ইহলোক এবং পরলোক, পার্থিব এবং আধ্যাত্মিক সকল ভাবে সঠিক এবং সত্যতায় পরিপূর্ণ হতে হবে।জন্ম জন্ম ধরে ঈশ্বরকে লাভ করার যে সঠিক পথ তা অনুসরণ করা হয় না। চারপাশে রাজ্যজুড়ে যে মিথ্যার কাজগুলো ঘটছে র সেখানে আমাদের কি করা উচিৎ!সেই মিথ্যার স্রোতের অনুকূলে যাওয়া মানেই নরকগামী হওয়া। এখানেই স্বর্গ, এখানেই নরক কর্মের দ্বারা তার ফল ভোগ করতে হয়।সত্যধর্ম্ম বিনা এই চেতনা সঞ্চারিত হওয়া সম্ভব না। অন্যান্য ধর্ম্ম কিছু উপদেশ আছে বটে তবে পরমপিতাকে পাওয়ার উপায় দেওয়া নেই।এই পথ দেখানোর যোগ্যতা হতে গেলে অশেষ গুণের অধিকারী হতে হয়,প্রমান স্বরূপ বহু সিদ্ধির ফল দেখাতে হয় নইলে তা পৃথিবীতে সত্য বলে বিবেচিত হবে না।তাই সত্যের প্রতি ভক্তি বৃদ্ধি করে নিজে পাপমুক্ত হয়ে, অন্যদের সেই পথের সন্ধান দেওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করাই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।কারন তার একমাত্র অভিপ্রেত পথ সত্যধর্ম্ম (কাম,ক্রোধ,লোভ,মদ,মাৎসর্য্য,কুল,শীল,জাতি,ঘৃনা, লজ্জা,ভয়) ইত্যাদি জন্মগত বৈশিষ্ট্য গুলোকে সুন্দর করতে শেখায়,অন্যায় কার্য থেকে বিরত থাকতে শেখায়।
রমণীর সঙ্গে বসে অবহেলায় যৌবন অতিবাহিত হচ্ছে এর ফলস্বরূপ পরবর্তীতে কাঁদতে হবে।তাহলে কি বিবাহ করা যাবে না? সন্তান জন্ম না দিলে জীব প্রবাহ রক্ষা হবে কিভাবে?এর উত্তরে;বিবাহের মূল উদ্দেশ্য প্রেম সাধনা, প্রেমের অঙ্কুর ভালোবাসা তা বজায় রেখে গুণ সাধনায় রত থাকা সম্ভব।
এখানে আরেক অর্থে 'রমণী' বলতে কল্পিত দেবদেবীর ছবি বা মূর্তি যার সাথে সেই দেব বা দেবীর চেহারার কোন মিল নেই সুতরাং মিথ্যা।এই মিথ্যার প্রতি আসক্ত হয়ে 'যৌবন' মানে এই জন্ম বিফল করছে সেইসকল ব্যক্তির সংখ্যা পৃথিবীতে বেশি।এই সাকারবাদের কারনে সেইসব দেবদেবীর গুণকীর্তন করার সময় পরমপিতার গুণবাচক শব্দ ব্যবহার করছে।নির্বানকে মুক্তি মনে করে,নিজেকে পরমপিতা ভাবছে, জাতিভেদের মত নিম্ন মানসিকতা পোষন করছে, ইত্যাদি।ধর্ম্মের অন্তর্নিহিত যে বাস্তব অর্থ সেই রসদ না বুঝে জ্ঞানের অভাবে কৃষ্ণকে পরমপিতা বলছে, হরিচাঁদ ঠাকুরকে পূর্ণব্রহ্ম বলছে, যীশু খ্রীষ্টকে পরমপিতা ভেবে বসছে।অনেকে আবার এই মোহকে অর্থের আখর,পেশায় পরিণত করেছে। কিন্তু অর্থ দিয়ে ধর্ম্ম হয়না।তাই টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে এনে প্রার্থনা পূজা পাঠ করালে তাতে লাভ কিছুই হয়না আর সেই ছবি বা মূর্তি যদি মিথ্যা হয় তাহলে কতটা পাপ হতে পারে! যেমন রমণী কে বিবাহ করা যেতে পারে তবে কেবল শারীরিক চাহিদা পূরণ করার উদ্দেশ্যে নয় বা অন্যান্য প্রয়োজনে নয় তেমনি ওই সকল দেবদেবীকে পূজা করা যায় যদি তারা কোন গুণে দেবত্ব অর্জন করেছেন তা সঠিকভাবে জানা যায়।সেই উপায় একমাত্র সত্যধর্ম্মে আছে।প্রতিটি বিষয়ে সত্যকে অবলম্বন না করলে গুণকে জানা সম্ভব না।নিজের আত্মগ্লানি নিজেকে স্বমুখে প্রকাশ করতে হয়। বিশেষ করে সত্য ধর্ম্মের শ্রেষ্ঠতাসূচক সঙ্গীত এবং নির্ব্বেদজনক সঙ্গীতে এই ভূলের মীমাংসা গুরুদেব লিপিবদ্ধ করেছেন।উপাসনা খন্ডে উপাসনার যে নিয়মাবলী তা অনুসরণ করে গুণকে উপলব্ধি করা এবং সেই গুণের অভ্যাস দ্বারা আত্মার আভরণ করে সাধ্যের মধ্যে আনতে পারাই সাধনা।
 আসক্তিতে পাপে আবর্তিত হতে হয়।যিঁনি আসক্তি মুক্ত হতে পেরেছেন সেই অনাসক্তির গুণে তিঁনি প্রেমিক হতে পারেন,মোক্ষ লাভ করেন অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার দর্শন লাভ করেন।তখন কামিনী বা কামনা বাসনা সে নারীর প্রতি বা পুরুষের প্রতি হোক এবং কাঞ্চন অর্থাৎ ধন ঐশ্বর্যের প্রতি হোক কোন প্রকার মোহ আসক্তি থাকে না।এই অনর্থকারি বিষয় থেকে নিজেকে সরাতে সমর্থ হলে সত্যকে স্থিরভাবে হৃদয়ে ধারন করা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ