গুরুপূজায় জনেরপ্রতি সঙ্গীত।

 



গুরু পূজায় জনেরপ্রতি সঙ্গীতের ব্যাখ্যা।


গুরু ভক্তি ছাড়া শিষ্যের মুক্তি নাই। গুরুভক্তি পার করলে প্রেমে পরিনত অর্থাৎ ঈশ্বর ভক্তিতে সমর্থ হয়। একটি গানে গুরুদেব লিখেছে ত্রিসন্ধ্যা গুরু পূজা করলে মোহ দূর হয়। পরিক্ষা কজন করেছে?? এত সুন্দর একটি গুণ যার দ্বারা অষ্টপাশ ষড়রিপু থেকে মুক্ত হওয়া যায়। গুরুদেব লিখেছে "সুখ সুখ সদা চাহ সুখের তত্ত্ব নাহি লহ....." তাই এই গানে জনসাধারণকে বলছেন "কত সুখ ভূবনে" অর্থাৎ এই সুখ গুণ অর্জনের সুখ যা গুরু ছাড়া সম্ভব না। "যদি অনাসক্ত চিত্তে থাকে জনগণে" অর্থাৎ প্রকৃত সুখ যদি তোমরা চাও তাহলে আসক্তি বিহীন হয়ে থাকতে হবে। "রাজত্ব, পাণ্ডিত্য, দাম্পত্য বিফলে, আসক্তির পাশ ধরে যদি গলে, পাশবদ্ধ পশু সমান ভূতলে, না হেরে সুখ বয়ানে" অর্থাৎ ধনসম্পদ প্রতিপত্তি, পাণ্ডিত্য, বৈবাহিক জীবন সব ফল বিহীন হবে যদি তোমরা পাশে আসক্ত হয়ে গলায় ধারণ করে রাখ এতে তোমরা এই পৃথিবীতে পাশবদ্ধ পশুর মত হয়ে থাকবে। তোমাদের বলে বোঝাতে পারব না অনাসক্ত গুণের কত যে সুখ।



"অনাসক্তি শক্তি লাভের কারণ অনাসক্ত বিনা মুক্ত কোন জন?" অর্থাৎ তোমাদের বলছি আসক্তি বিহীনের শক্তি লাভ করার কারণ একমাত্র অনাসক্ত বীনা মুক্তি সম্ভব না অর্থাৎ ঈশ্বর দর্শন সম্ভব না। "পুণ্যপাপহীন অনাসক্ত জন, আর কি বলিব গুণে" অর্থাৎ একমাত্র আসক্ত মুক্ত হলেই পাপ মুক্ত হয়ে পুণ্য যেমন সিদ্ধি হয় তাঁর গুণের কথা আর কত বলব তা বলে শেষ করা যায় না তিনি যে কত সুখি।



"অনাসক্ত জন হয় ভক্তিমান্।" অর্থাৎ পাশে আবদ্ধ যে সে কখনও ভক্তিমান হয় না তাই বলছে পাশে অনাসক্ত যিনি তিনিই  ভক্তিমান। "অনাসক্ত পায় প্রেমের বাগান, তাহে মোক্ষ ফল লভে ভাগ্যবান্ অনাসক্তির গুণে।" অর্থাৎ যিনি পাপ মুক্ত হয়েছেন সেই আসক্তি মুক্ত ব্যাক্তি প্রেমের বাগান লাভ করেন যেমন বহু গুণে একত্ব লাভ করেন সেই ভাগ্যবান্ই পরমপিতার দর্শন লাভ করে নিত্যানন্দে থাকেন একমাত্র অনাসক্তির গুণ তাঁর মধ্যে আছে বলে।



"গুরু বলে জীব অনাসক্তি নিধি লভিবারে আশা কর তুমি যদি গুরুতে ভকতি যোগে বিভুপ্রীতি কর ওরে সঘনে।।" অর্থাৎ এখানে গুরু বলছে হে জনগণ পরম পিতাকে (নিধি) যদি পাওয়ার আশা কর তাহলে আসক্তি মুক্ত হয়েই পেতে হবে তারজন্য প্রথমে গুরুদেবকে ভক্তি করে অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে যোগযুক্ত হয়ে গুরুলোক (ঈশ্বর লোক) অবস্থান করতে পারবে।*

                       ব্যাখ্যা- আদিষ্ট নিরূপম


* এত কাল গুরু পূজায় জনেরপ্রতি সঙ্গীতটি পরমপিতার উপাসনায় ব্যবহার হয়েছে, কেন হল? যখন পরমপিতার উপাসনায় পার্থিব গুরু উপদেশ মূলক গান বা গুরুর চিন্তা অথবা উচ্চারণ করা অর্থাৎ পরমপিতা থেকে বিচ্যুত হয়ে একাগ্রতা ভঙ্গ হয় তখন এতদিন কেন এমন হলো???

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ