অনন্ত মঙ্গলময় পিতা।


"মঙ্গল তোমার নাম, মঙ্গল তোমার ধাম,
মঙ্গল তোমার কার্য, তুমি মঙ্গলনিদান।
অতুল ভব সাগরে অনুদিন তুমি সহায়,
পাপ তিমির নাশি বিতর কল্যান।
দূর্বল হৃদয় মোর,আশ্রয় করো দান,
দূর্গম পথ তরাও দাও হে পরিত্রাণ।
দূর্জয় রিপু দ্বন্দে অন্তরে বাহিরে,
এ সঙ্কটে ধ্রুব নেত্রে তুমি করো বিজয় দান।"

পরমপিতা অনন্ত মঙ্গলময়,যিনি মঙ্গলগুণে পরমপিতাকে জেনেছেন,আমরা যাকে আপাত দৃষ্টিতে অমঙ্গল মনে করব তার মধ্যেও তিনি মঙ্গল দেখতে পারেন।কারন পরমপিতা যা করেন আমাদের মঙ্গলের জন্য,বর্তমানে না বুঝলেও ভবিষ্যতে বোঝা যায়, গুরু বলে দিতে পারেন তাতে আমার মঙ্গল কিভাবে অন্তর্নিহীত আছে।সুখ দুঃখ চক্রাকারে পরিবর্তন হয়,একটা আসলে আরেকটি অপেক্ষায় থাকে।
পৃথিবীতে যতপ্রকার অন্যায় কার্য ঘটে তা প্রত্যক্ষ ভাবে অথবা পরোক্ষভাবে কাম,ক্রোধ,লোভ, মদ, মাৎসর্য্য ইত্যাদি রিপু এবং কুল,শীল,জাতি,ঘৃনা, লজ্জা,ভয় ইত্যাদি পাশের তাড়নায় ঘটিত হয়।জন্মের পর থেকে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার যুক্তি কেউ দেয়নি, বরং পারিপার্শ্বিক সকলে এতে ইন্ধন যোগায়।কোটি কোটি বৎসরে দুই একজন নিজের আত্মমঙ্গল সাধন করেন, এইসত্য আমাদের বোধগম্য যতদিন না হবে আমরা নিজেদের ভালো নিজেরা বুঝবো না,তাহলে সেই কোটি কোটি বছরে দুই একজন এর বাইরে কার যোগ্যতা আছে যে আমার প্রকৃত মঙ্গল জানাবেন?আগে নিজের সাধনা ফলে তো অর্জন করতে হবে তাকে ।এই কারনে এই সৃষ্ট জগতের যত আত্মা আছে তাদের মধ্যে গুরুই শ্রেষ্ঠ গুণ অনুসারে শ্রেষ্ঠত্ব বিবেচিত হয়।গুরু ভিন্ন আর কারোর পূজা করার প্রয়োজন‌‌ই নেই, সমস্ত দেবদেবী তাঁর গুণের কাছে নত। যেমন পৃথিবীতে প্রায় ৪২০০ টি ধর্ম্ম আছে তার মধ্যে সত্যধর্ম্ম শ্রেষ্ঠ কারন এখানে মানব জন্মের সার্থকতা সম্পাদনের উপায় প্রমান সহ বিদ্যমান।পরমপিতার একমাত্র অভিপ্রেত সত্যতায় পরিপূর্ণ, অপরিবর্তনীয় মুক্তির পথ। গুরুদেব বলেছেন "পাশবদ্ধ পশু সমান ভূতলে"। উপাসনা দ্বারা গুণকে জানতে পারা এবং গুণের অভ্যাসের মাধ্যমে সেই গুণগুলো আত্মায় প্রবেশ করানোই প্রকৃত মঙ্গল সাধন, দেবত্ব অর্জন করার পরও অষ্টপাশ ষড়রিপু বশিভূত হয় না,এ থেকে মুক্তি পাওয়ার বাসনা তৈরি হয়,সচেষ্ট হয়। ব্রহ্মদর্শন করার আগের মূহূর্তে অষ্টপাশ নিয়ন্ত্রিত হয়, সাধকের ইচ্ছাধীন হয়।
 পরমপিতার আরেক নাম মঙ্গলময়,তাঁর অনন্ত গুণের মধ্যে মঙ্গল একটি গুণ, তাঁর গুণের চর্চা করলেই তিঁনি যে মঙ্গলময় এটি তাঁর যেকোন গুণের বিশ্লেষণেই ক্রমাগত অনুভূত হয় ।আমরা যদি কোন শুভ বাসনা করি তাতে আমরা অক্ষম হলেও পরমপিতার মঙ্গল গুণে তা সফল হয়। আমাদের অন্তরে থাকা বিষরাশি তাঁর মঙ্গলগুণে সুধাময় হয়ে ওঠে।অনন্ত ভাবে পরমপিতাকে জেনেছেন যে উন্নত আত্মা তাঁর চৈতন্য শক্তিতে কিছু আর অমঙ্গল বলে মনে হয় না। সৃষ্টিকর্তা যা করছেন সবই মঙ্গলের জন্য করছেন তিঁনি কোন কালে আমাদের অমঙ্গল বিধান‌ করেন না এই নির্ভরতা গুণে তিঁনি পরাকাষ্ঠা প্রাপ্ত হন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ