ভক্তি গুণের ধ্যান।




 "কোমল মিশ্রগুণ। প্রেমের সীমাবদ্ধ ভাবকে ভক্তি কহে।যে গুণ দ্বারা উপকারী বা আপন অপেক্ষা উন্নত মহাত্মার প্রতি কৃতজ্ঞতা সহকারে মন আকৃষ্ট হয়,যে গুণ দ্বারা সুখে সুখ,দুঃখে দুঃখ ইত্যাদি ভাবসকল " ইনি আমা অপেক্ষা উন্নত" এই জ্ঞান সহকারে সীমাবদ্ধ ভাবে উপস্থিত হয়,যে গুণ ঐ গুণ ভাজনের দুঃখ নিবৃত্তি ও সুখ বৃদ্ধি করা জীবনের মহাব্রত বলিয়া প্রতিয়মান হয়,ফলতঃ যে গুণে নিজের স্বার্থের জন্য নির্ভরতা বা নির্ভরতার অঙ্কুর হৃদয়ে উদিত হইয়া অন্যের প্রতি যে আসক্তি বা অনুরাগ উৎপাদন করে তাহাকে ভক্তি কহে।মূলকথা ভয়ে ভয়ে ভালোবাসাকে ভক্তি কহে"।
                      *** ঈশ্বর গুরুনাথ।

ভক্তি বিনা সাধন জীবনে মুক্তির উপায় নেই।বহু একত্ব প্রাপ্ত মহাত্মাও ভক্তি গুণে পরাকাষ্ঠা লাভ করতে সমর্থ হননি।ভক্তি গুণ অর্জনের জন্য বারংবার জন্মগ্রহণ করতে হয়। ঈশ্বর গুরুনাথ ১৮৮৫ সালে ২০ শে অক্টোবর পৃথিবীবাসীর উদ্ধারের নিমিত্ত সত্যধর্ম্মের আবিষ্কার করেন। এই সৃষ্ট মন্ডলে একমাত্র তিঁনি গুণ অর্জন করে তার উপায় সুচারুভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন যাতে আমরা মানব জন্মের সার্থকতা সম্পাদন করতে পারি এখানেই তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব।


জন্ম এবং মৃত্যুর মধ্যে যে সময়কাল তাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার দায়ভার তিঁনি অনন্তকালের জন্য নিজগুণে গ্রহন করেছেন।কি জীব, কি জড় এই বিশ্ব প্রকৃতির মঙ্গল কার্যে তিঁনি সদা নিয়োজিত।



উপরিউক্ত উপদেশটিতে গুরুর প্রতি সংশয় হতে পারে কিন্তু ভক্তিতে সংশয় এর কোন স্থান নেই আছে কেবল নির্ভরতা। গুরুকে কেমন হতে হয়,আমার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা কি,আমি তাঁর আদেশ কেন পালন করবো এই বিষয়গুলি সম্পর্কে কার্য কারন জ্ঞানের অভাবের ফলে সংশয় হয়ে বসে।



এই উপদেশটি কেবলমাত্র সত্যধর্ম্মে যিনি আদিষ্ট হয়ে দীক্ষাকার্য করবেন তাঁর জন্য প্রযোজ্য। তাঁকে অষ্টপাশ ষড়রিপুকে দমন পূর্বক গুরু হওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা প্রমান দিতে হয় এছাড়াও ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি গুণ অর্জন করতে হয়।



গুরুদেব লিখেছেন "গুরুর আদেশে দোষগুণ বিচার করিও না"- তাঁর অশেষ গুণরাশি দোষলেশ শূণ্য হয় আর কার্য কারন জ্ঞান না থাকায়,অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় সেই মূহূর্তে তার গুণ অর্থাৎ উপকারীতা বোধগম্য হয় না।



এই জগতে সবাই পাশবদ্ধ পশু হয়ে জন্মগ্রহণ করে,সেখান‌ থেকে সত্য কে অবলম্বন করে আত্মোন্নতির ইচ্ছে সবার থাকে না, দেবত্ব অর্জন করলেও কাম,ক্রোধ,লোভ,মদ, মাৎসর্য্য ইত্যাদির প্রভাব থেকে যায়।তাই অবশ্যই গুরু ভিন্ন উন্নতি কেউ করাতে পারবে না। পৃথিবীময় কল্পনায় মেতে মিথ্যাচারে নরকের কার্য করছে। গুরুদেব বলেছেন কল্পনা মাত্রই মিথ্যা, মিথ্যা মাত্রই পাপস্পর্শ হয় কারন আমরা সত্য স্বরূপের সন্তান।



উপাসনা বিনা আত্মা সতেজ হয় না।অভেদজ্ঞান পূর্বক জন্মজন্মান্তরের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে দীক্ষা না পেলে পাপবোধ,আত্মগ্লানী,পাপ থেকে মুক্তির বাসনা তৈরী হয় না।তাই ধর্ম্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে তারা বঞ্চিত।এ বিষয়ে তারা পূণ্যকে পাপ এবং ঘোর পাপকে পূণ্য বলবে এটাই স্বাভাবিক।


সূর্য,বায়ু,অগ্নি,জল, মৃত্তিকা,উদ্ভিদ ইত্যাদি এই প্রকৃতি স্রষ্টার নিয়মে বাঁধা। স্বাধীনতার বশে কোন ভুল তাদের হয়না।আমারা গুণ অর্জনের স্বার্থ ভুলে উচিৎ অনুচিৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমাদের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা ব্যাক্তি স্বাধীনতা আরোপ করেছেন। সবক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছেশক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই পরিশেষে গুরুদেব লিখেছেন "অম্লান বদনে প্রফুল্ল মুখে করিবে"- সেই ব্যাক্তি স্বাধীনতায় পরমপিতা এবং গুরুদেব কেউই হস্তক্ষেপ করেননা যার প্রমাণ চারপাশে ঘটতে থাকা অন্যায়।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ