সুখ, happiness


অগণ্য ভূবন, অসংখ্য প্রাণী, সমগ্র জড় জগৎ সকলেই সৃষ্টির নিয়ম অনুসারে কার্যে রত যার লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে সবার মধ্যে সৃষ্টিকর্তা ইচ্ছেশক্তি দিয়ে রেখেছেন। সময়ের সাথে সাথে তারা পরিবর্তনশীল। সুখী হতে আমরা সকলেই চাই তবে প্রকৃত সুখের সংজ্ঞা জানি কজন ! 

"সুখ সুখ সদা চাহো, সুখের ‌তত্ত্ব নাহি লহ,
দুঃখময় সুখ বহ , লভিলে না সুখ জীবনে"

ত্যাগ এর সমান সুখ নেই।যারা ভোগে আসক্ত তাদের কাছে ত্যাগের সুখ দূর্লভ। ক্ষণিকের সুখের মোহে আমরা স্থায়ী সুখ থেকে বঞ্চিত হই।যেসব ব্যাক্তির ইহকাল পরকালের ধারণা নেই,তারা সাধারণত এই একটি জীবনের চাহিদার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরেন। জন্মসূত্রে আমরা কাম,ক্রোধ, লোভ,মদ, মাৎসর্য্য ইত্যাদি ষড়রিপু নিয়ে জন্মগ্রহণ করি এই বৈশিষ্ট্য গুলোর চর্চার ফলে আমাদের ঈন্দ্রীয় তথা এই পঞ্চভৌতিক দেহ পাওয়া,না পাওয়ার মাধ্যমে সুখলাভ করে তার থেকে অনেকাংশে উৎকৃষ্ট আত্মার গুণ অর্জনের সুখ।যে ভালো কাজটি গতকাল আমি পারছিলাম না আজ পারছি ,অভ্যাস দ্বারা কোন গুণ আমাদের সাধ্যের মধ্যে আসে তার সুখে আত্মতৃপ্তি বোধ হয়।
সুখের সংজ্ঞা সকলের কাছে সমান হয় না।
ভোজন বিলাস,জ্ঞান অর্জন, সাহিত্য চর্চা,অর্থ উপার্জন,ভ্রমন, পরোপকার বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জন সুখ পায়।
ত্যাগেই যে প্রকৃত সুখ এবিষয়ে আর সন্দেহ নেই।কোন বিজ্ঞানী যখন কিছু আবিস্কার করেন তাকে বহুকিছু ত্যাগ করতে হয় যার ফলস্বরূপ তার মৃত্যুর পরেও ভবিষ্যতে আমরা সেই আবিষ্কারের ফল ভোগ করে সুখ পাই। পৃথিবীতে যতপ্রকার সুখদায়ি প্রশংসনীয় কার্য সম্পাদন হয়েছে তার মূলে রয়েছে ত্যাগ।
সত্যের উৎকৃষ্ট সাধক,যিঁনি সত্য গুণে একত্ব প্রাপ্ত হয়ে সত্য গুণকে জেনেছেন, নিরন্তর পরমেশ্বর এঁর গুণকীর্তন এ রত,এই পৃথিবীবাসী যাতে উদ্ধার হয়ে মুক্তির পথ প্রাপ্ত হতে পারে সেই মহতী কার্যে জীবন উৎসর্গ করেছেন,যিঁনি সম্পত্তি বিষয়ে নিস্পৃহতার শীর্ষে অবস্থান করেন,পার্থিব সকল প্রকার ভোগে যিঁনি অনাসক্ত, অষ্টপাশ ষড়রিপু যাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকে, মায়ার মধ্যে থেকেও যিঁনি মায়ার অতীত হয়ে থাকেন কোটি বৎসরে দুই একজন এমন গুণসম্পন্ন হন। পরমপিতার আদেশ প্রাপ্ত আদীষ্ট সাধকই পৃথিবীতে প্রকৃত সুখী এবং সুখী হওয়ার যোগ্য পথপ্রদর্শক।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ